অনিল বসু,বিনয় কোঙার ,অনুব্রত মণ্ডল ,দীলিপ ঘোষ ,সায়ন্তন , বাবুল হয়ে অধীর চৌধুরী । বাংলার রাজনীতি তে কদর্য ভাষা প্রয়োগের সেই ট্রাডিশন সমানে চলছে..দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে তুই তোকারি ও বাপ তুলিয়ে অধীর বাবুর সাম্প্রতিক মন্তব্য সামনে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কিত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বঙ্গবাসী। অধীর বাবু রাজ্য রাজনীতিতে ভুঁইফোড় নন । বহরমপুর থেকে তিনি দীর্ঘদিন লোকসভার নির্বাচিত সদস্য । এহেন মানুষের মুখ থেকে যখন এতাদৃশ কুকথা অবিরল ধারায় নির্গত হয় তখন মনে হতেই পারে বাঙালী তার স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি শিষ্টাচার হারিয়ে ফেলেছে । কোন দলকেই এ বিষয়ে এককভাবব দায়ী করা যাবে না । কিন্তু অধীর চৌধুরী সিনিয়ার নেতা ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি । দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও তাঁর একটা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে তা অনস্বীকার্য। এ হেন নেতার কোন বাকসংযম বা আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকবে না তা মোটেই কাম্য নয় ॥ এ আর কি বা ক্যা নিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আতঙ্কিত । তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন । অনেকগুলো রাজ্য সরকার এর বিরোধীতা করেছে । রাস্তায় আন্দোলন নেমে এসেছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা হিসেবে অধীরবাবু নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সরব হবেন এটাই প্রত্যাশিত । সংসদ ও সংসদের বাইরে সভায় অধীর এ বিষয়ে তাঁর সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরতেই পারেন । মোদী বা শাহের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ম যুক্তির বাণ হানতে পারেন । কিন্তু যুক্তি হারিয়ে তিনি যদি রকের ভাষা ব্যবহার করেন তাহলে ভাবতে হয় যুক্তির বিস্তারে তিনি নিষ্ঠ নন । তাই মেজাজ হারাচ্ছেন । নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী । তাঁরা ভারতবাসীর ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন । এটা তো বাস্তব সত্য । ফলে তাঁদের চেয়ারটাকে সম্মান করতেই হবে সকলকে । একইভাবে সম্মান করতে হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারটিকেও । কিন্তু আজ সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তের যুগে এই শুভবুদ্ধির আশা দুরাশা মাত্র। রুচিশীল ব্যঙ্গাত্মক মিম বা কার্টুন গণতন্ত্রের অঙ্গ । তাতে কারও আপত্তি থাকতে পারে না। আপত্তি থাকে অশালীনতায় । কিন্তু বাস্তব হল অশালীনতাই আজ নিয়ম । অধীরবাবুর মতো সিনিয়ার রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি যদি তাতে ইন্ধন দেন সেটা আরও দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আজকেত বাংলায় দাঁড়িয়ে সেটাই ভবিতব্য বলে মনে হচ্ছে । রাজনৈতিক নেতারা যা বলছেন তা পার্ষদগণের মধ্যে সঞ্চারিত হচ্ছে । এক ঘৃণার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা ঘৃণার বুদবুদ ফেনিয়ে উঠছে । বঙ্গ রাজনীতিতে এ এক ঘোর অন্ধকার সময় ।
ছবি - সংগৃহিত